বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মায়ের দেওয়া কিডনি কন্যার দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে এই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার ১৭ আগস্ট সকাল ১০টায় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলায় এই কিডনি দাতা ও গ্রহীতার ছাড়পত্র প্রদান উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিষয়টি জানান বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
এ সময় উপাচার্য বলেন, রোগী যেন দেশের বাইরে না যায়, সে লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল কাজ করছে। দেশের মানুষ ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিশেষ করে কিডনি, লিভার, কর্নিয়া ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বিদেশে যায়। আরও বিদেশে যায় ক্যান্সার, ইনফার্টিলিটি, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট, আর্থোস্কপি, স্টেমসেল থেরাপি, রোবটিক সার্জারি, বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট, হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার প্রয়োজনে। আমরা এসব চিকিৎসা সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে শুরু করতে চাই। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
এ সময় অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকে আমাদের অন্যরকম একটি দিন। আমাদের সামনে কিডনি দাতা মা ও কিডনি গ্রহীতা মেয়ে হাসিমুখে বসে আছেন। এমন হাসিমাখা মুখ সব রোগীর ক্ষেত্রে আমরা দেখতে চাই।
সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল সূত্র জানায়, ফরিদপুরের বাসিন্দা ১৭ বছরের কিশোরী শ্রাবণী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ফেইলর হয়ে অসুস্থ ছিলেন। তার মা ৪৫ বছর বয়সী মনোয়ারা মেয়েকে বাঁচাতে এগিয়ে এসে নিজের একটি কিডনি দান করার সম্মতি প্রদান করেন। কিডনি দাতা ও গ্রহীতার সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর ১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। এ কিডনি প্রতিস্থাপনে নেতৃত্ব দেন বিএসএমএমইউ’র ইউরোলজি বিভাগের রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল।
অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ডা. দেবব্রত বনিক, বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবাশীষ বনিক, শিশু কিডনি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফরোজা বেগম, ইউরোলজি বিভাগের রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইউনিটের অধ্যাপক ডা. তৌহিদ মো. সাইফুল হোসেন দিপু, সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারুক হোসেনসহ ৩১ জন চিকিৎসক এই কিডনি প্রতিস্থাপনের বিভিন্ন চিকিৎসাসেবার কার্যক্রমে অংশ নেন। এ অনুষ্ঠানে কিডনি গ্রহীতা ও দাতাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা এবং কেক কেটে বিদায় জানানো হয়। হাসপাতালের পক্ষ থেকে তাদের হাতে ওষুধও তুলে দেন উপাচার্য।